জাগ্রত বিবেক মানবিক সমাজ
প্রচারাভিযান ঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃ ১৬-৩০ ২০২২
বিসমিল্লাহির রহমানির রাইম
জাগ্রত বিবেক-মানবিক সমাজ প্রচারাভিযানঃ ১৬-৩০ জুন ২০২২
হে পথিক! ক্ষণকাল একটু ধৈর্য্য সহকারে শ্রবণ করুন আমাদের এই ক্ষুদ্র
আবেদন।
মানব সমাজ আজ নিদারুণ সংকটের সম্মুখে দণ্ডায়মান। একদিকে নারীরা যেমন মৌখিক, শারীরিক, যৌন, মানসিক এবং আর্থিক শোষণের শিকার, তেমনি পুরুষও এই ধরণের সমস্যার সম্মুখীন। আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা প্রত্যেকেই বিভিন্ন ধরনের সমস্যার শিকার। দুর্নীতি, অশিক্ষা, শিশুশ্রম, খুন, জুলুম, বর্বরতার সীমা অতিক্রম করেছে। কর্মহীনতার ফলে যুবকদের মধ্যে অনিশ্চয়তা ও অপরাধ প্রবনতা তৈরী করছে। সামাজিক বিভাজনের মাধ্যমে সম্পর্কে ফাটল সৃষ্টি করা, হিংসা, বিদ্বেষ ও অবিশ্বাসের পরিবেশ তৈরী হয়েছে। শোষণ ও লুণ্ঠন ব্রিটিশদেরকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদী শক্তির সর্বাত্মক উত্থান হয়েছে। | গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো চরম হুমকির সম্মুখীন। ইসলাম আতঙ্ক, | মবলিঞ্চিং, দুর্বল ও সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, অধিকার অস্বীকারও ছিনিয়ে নেওয়ার মত বিষয় সমাজের বৃহত্তর অংশের মানুষের জীবন বিপন্ন করে তুলেছে। বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ ও সেক্যুলার রাজনৈতিক দলগুলি এ নিয়ে তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
পরিত্রাণের উপায় কী? এই মুহূর্তে মানুষ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব কর্তব্য কি? একমাত্র জাগ্রত ও বলিষ্ঠ বিবেক দ্বারা সংকট মোচন সম্ভব। বিবেক কি? ভালোর ভালোত্ব সম্পর্কে এবং মন্দের মন্দত্ব সম্পর্কে বোধ। মন্দ পরিহার করে ভালোকে গ্রহণ করাই বিবেকের আচরণ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তি- ‘ভালো মন্দের মধ্য থেকে ভালোকে বেছে নেবে বিবেকের দ্বারা- প্রথার দ্বারা নয়। এই হচ্ছে মানুষ। সেই বিবেক আজ মুমূর্ষ, ক্ষীণ, দুর্বল। রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন। দুর্বল সংখ্যালঘু সমাজের প্রতি নিপীড়ন নির্যাতন। দলিতদের নিষ্পেষণ। মানবসমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পাপাচারের পরিবেষ্টন। শান্তিকামী মানুষ শুধু নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করবে?
মানুষ ভালোবাসার সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে সভ্যতার বিকাশ ও উন্নয়নের কাজকে ত্বরান্বিত করবে। এই সম্পর্ক যতটা প্রেম, ভালোবাসা, সহানুভূতি, বিশ্বাস, ভরসা এবং ত্যাগ ও কুরবানীর প্রেরণায় সুদৃঢ় হবে, সমাজ ততোধিক পরিমাণ জাগ্রত ও মানবিক হবে। মনে রাখতে হবে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ আদালত হল বিবেক। হিন্দু ধর্ম বিশ্বাসের অন্যতম আইকন- শ্রীরাম। অবাক বিস্ময়ে আমরা লক্ষ করছি জয় শ্রীরাম ধনীকে এখন বিভীষিকাময় করে দেওয়া হচ্ছে। মবলিঞ্চিং
এর উদ্দীপনা, মুসলিম কৃষ্টি কালচার-স্থাপত্য ধ্বংস করা, নারীদের বেইজ্জতি, বেআব্রু করার প্রেরণা হয়ে উঠছে জয় শ্রীরাম ধ্বনী। এই ধ্বনী। একশ্রেণীর মানুষ সাম্প্রাদায়িক দাঙ্গা বাধানোর শ্লোগান হিসেবে ব্যবহার করছে । ভোটের রাজনীতিতে ধর্মের নামে মেরুকরণ। রামায়ণের রামের শিক্ষা ‘সত্যের প্রতিষ্ঠা, মিথ্যার অপসারণ, দুর্বৃত্ত দমন, প্রেম-ভালোবাসা ভ্রাতৃত্বের | অনুপ্রেরণা' এমন রামের নামে বদনাম অত্যন্ত বেদনাদায়ক। স্বামী বিবেকানন্দ | | বলেন: ‘ধর্ম এমন একটি ভাব যাহা পশুকে মনুষত্বে এবং মানুষকে দেবত্বে | | ফেরিওয়ালারা তাদের দিয়ে কি সর্বনাশের খেলা খেলছে। যেদিন বুঝতে পারবে | | সেদিন অনেক দেরি হয়ে যাবে। শ্রীলংকা দেশটা তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। সমাজ অন্যায় জুলুমের বিরুদ্ধে
এটি কাঙ্খিত ছিল যে মুসলিম ব্যক্তি ও | গড়ে তুলবে সর্বাত্মক প্রতিরোধ, হবেন নারী, শিশু, বিধবা, পঙ্গু, গরীবদের | ত্রাণকর্তা। মানুষকে দেখাবে কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির পথ। তারা আজ | | আদর্শ চ্যুত। মানুষকে পুড়িয়ে মারার মত ঘৃণ্য কাজ, ভাতৃঘাতী, রাজনৈতিক | কোন্দল ও বিভিন্ন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে মুসলিমদের নাম। মদ, সূদ, নারী নির্যাতনের মত নিষিদ্ধ কাজে আকণ্ঠ ডুবে যাচ্ছে মুসলিম সমাজ। অথচ ইসলাম শান্তি ও মুসলিম অর্থ শান্তির অনুগত। বাস্তব কতই না বৈপরিত্যপূর্ণ। এর উক্তি
মানবিক সমাজ গড়ার লক্ষ্যে মহামানব হযরত মুহাম্মদ প্রণিধানযোগ্য। বিদায় হজের ভাষণে তিনি বলেন: ‘কালোর ওপর সাদা মানুষের, সাদার উপর কালো মানুষের এবং অনারবের ওপর আরবের, আরবের উপর অনারবের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। সেই ব্যক্তি আল্লাহর কাছে সম্মানীয় যে আল্লাহ ভীরু এবং মানব কল্যাণে নিয়োজিত। আমাদের আদি পিতা এক। রক্তের সম্পর্কে তোমরা পরস্পর ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ। ধর্ম নিয়ে তোমরা বাড়াবাড়ি করো না। কেননা এটা করতে গিয়ে ইতিপূর্বে অনেক জাতি ধ্বংস হয়ে গেছে'।
আজ জাতি ধ্বংস গহ্বরের কিনারে। এখনও সময় আছে। যদি সুস্থ সুন্দর মানবতা মন্ডিত শান্তিপূর্ণ সমাজ উপহার দিতে চাই তাহলে সুপ্ত বিবেককে জাগ্রত করবার লক্ষে সত্যপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে। মিথ্যাকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করতে হবে। জামাআতে ইসলামী হিন্দের প্রচার অভিযানের এটাই প্রতিপাদ্য। আসুন সহযোগিতা সহমর্মিতা দিয়ে প্রচার অভিযানকে সাফল্য মন্ডিত করে তুলুন।
(সাঃ)
জামাআতে ইসলামী হিন্দ, পশ্চিমবঙ্গ
২২/১ লেনিন সরণী, কলকাতা – ৭০০০১৩ jamaatwb@gmail.com || jihwb || jihwb.org